64 District

নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত ও দর্শনীয় স্থান

নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত? আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা এই প্রশ্নের উপর দিতে পারিনা। এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন তোমাদের নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত। আসুন তাহলে আমরা জেনে নি নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত, নেএকোণা জেলার দর্শনীয় স্থান, নেএকোণা কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত,নেত্রকোনা জেলার নামকরণ কিভাবে হয় ও নেএকোণা জেলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আসুন তাহলে জেনেনি নেএকোণা জেলা সম্পর্কে…

নেত্রকোনা জেলার নামকরণ কিভাবে হয়?

কালিগঞ্জ হলো নেএকোণা জেলার পূর্বের নাম বা পূর্বনাম। পূর্বে এ অঞ্চলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি বসবাস করতো। ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী জানা যায়,অষ্টাদশ শতাব্দীর তৎকালীন গৌরিপুরের জমিদার মগড়া নদীর তীরে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এই নদীর তীরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন মানুষ বানিজ্যের উদ্দেশ্য আসতেন আস্তে আস্তে স্থানটি(শহর) কালিগঞ্জ বাজার নামে পরিচিতি পায়। এরপর বলা যায় কালের বিবর্তনের কারনে ব্রিটিশদের উচ্চারণে  নাটেরকোনা নামকরণ করা হয় ও পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে নেএকোণা হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। বর্তমানে এ অঞ্চলে হিন্দু, মুসলিম ও অনান্য সম্প্রদারের মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করছেন।

নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত
নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত

নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত

নেএকোণা জেলাকে যেমন ঐতিহ্য দিক থেকে সমৃদ্ধ বলা যায়। তেমনি নেএকোণা জেলায় বিখ্যাত মিষ্টি হিসেবে বিখ্যাত “বালিশ মিষ্টি“। বালিশ মিষ্টি এ কারনে নেএকোণা জেলা বাংলাদেশ ও পৃথিবী কিছু দেশে বিখ্যাত। এছাড়া এ অঞ্চলে বেশকিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা এই অঞ্চলকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলছে।

নেত্রকোণা জেলা কবে প্রতিষ্ঠিত হয় 

ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী, পূর্বে নেএকোণা মহকুমা হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৭ জানুয়ারি 

১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে নেএকোণাকে মহকুমা থেকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। 

নেএকোণা জেলা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি জেলা নেএকোণা জেলা। এই নেএকোণা জেলাটিতে রয়েছে ১০টি উপজেলা ও ৮৬টি ইউনিয়ন। জেলাটি অপরূপ সৌন্দর্যের একটি জেলা। এই জেলাটিতে আপনি লাল বালি,চীনা মাটির পাহাড়,টিলা,হাওড়,নদী, খাল, বিল,পাহাড়ি জলপ্রপাত দেখতে পাবেন। এ অঞ্চলে দর্শনীয় স্থান দেখার কারণে প্রতিবছর দেশি-বিদেশি পর্যটক এ স্থানে আসেন। এই জেলাটির উওরে ভারতের মেঘালয়ের অবস্থান। সেহেতু আপনি বুজতেই পারছেন জেলাটি সীমান্তবর্তী একটি জেলা। পূর্ব দিকে সুনামগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা ও দক্ষিণ দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার অবস্থান। আসুন আমরা এবার জেনে নি নেএকোণা জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে…

নেএকোণা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

নেএকোণা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহের নাম নিচে উপস্থাপন করা হলো:

  • বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড়
  • ডিঙ্গাপোতা হাওর
  • বাঘবেড় জমিদার বাড়ি
  • নিঝুম পার্ক
  • বিরিশিরি
  • উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী
  • সাত শহীদের মাজার
  • রাণীমাতা রাশমণি স্মৃতি সৌধ
  • টংক শহীদ স্মৃতি সৌধ
  • সোমেশ্বরী নদী
  • কুমুদীনি স্তম্ভ
  • রোয়াইলবাড়ি দূর্গ
  • নারায়ণডহর জমিদার বাড়ি
  • চরহাইজদা হাওর
  • কমলা রাণী দিঘী
  • রানীখং মিশন
  • বিরিশিরি কালচারাল একাডেমী
  • বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

এ সকল দর্শনীয় স্থান সমূহ ছাড়াও নেএকোণা জেলায় আরো কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যা আপননি নেএকোণা জেলা ভ্রমণ সময়ে জানতে পারবেন। 

নেত্রকোনার বিখ্যাত খাবারের নাম কী?

নেএকোণার বিখ্যাত খাবার হিসেবে বালিশ মিষ্টি সর্বাধিক জনপ্রিয়। বালিশ মিষ্টি ছাড়াও এ অঞ্চলের কিছু আঞ্চলিক খাবার রয়েছে যা আঞ্চলিক পদ্ধতি অনুসরণ করে রান্না করা করা হয়। আপনি নেএকোণা জেলায় ভ্রমণ করতে আসলে অবশ্যই বালিশ মিষ্টি ও এ অঞ্চলের আঞ্চলিক পদ্ধতি অনুসরণ করে রান্না অবশ্যই খাবেন। এছাড়া নেএকোণা জেলার মানুষ খুবই আত্মীয়তা পরায়ন হয়ে থাকে, যা আপনাকে মুদ্ধ করবে। 

নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি কত টাকা কেজি?

নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টির দাম মূলত নির্ভর করে বালিশ মিষ্টির আকার ও ওজনের উপর নির্ভর করে। যেমন:

  1. ২৫০ গ্রাম আকারের একটি বালিশ মিষ্টির দাম বর্তমানে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। তবে দাম কম বেশি হতে পারে।
  2. ৫০০ গ্রাম আকারের একটি বালিশ মিষ্টির দাম ১০০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা। তবে দাম কম বেশি হতে পারে।

এভাবে ৭০০ গ্রাম ওজনের একটি, ১ কেজি ওজনের একটি বালিশ মিষ্টির উপর দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে উল্লেখ যে বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূলের দাম কমবেশি হবার কারনে বালিশ মিষ্টির দাম কম বেশি হতে পারে।

বালিশ মিষ্টি সম্পর্কে জানুন

বালিশ মিষ্টি নামটি শুনতে পাবার পর আপনার মনে হতে পারে এটি কি আসলে বালিশের মতো বড় মিষ্টি। আসলে এতো বড় নয় তবে এটি দেখতে বালিশের মতো। সাধারণত ২৫০ গ্রাম ওজন থেকে ১ কেজি বা তার বেশি ওজনে বালিশ মিষ্টি বানানো হয় নেএকোণা জেলায়। আবার এই বালিশ মিষ্টি গয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত। কারন এই বালিশ মিষ্টির প্রথম প্রস্তুতকারী গয়ানাথ ঘোষ। নেএকোণা জেলা শহরের বারহাট্টা রোডে আপনি দেখতে পাবেন যে “গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার” এখানে আপনি এই বালিশ মিষ্টি পাবেন। তবে জানা যায় এই মিষ্টান্ন ভান্ডার ছাড়াও আরো কিছু দোকানে আপনি এই বালিশ মিষ্টি পাবেন। 

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

প্রশ্ন: নেএকোণা জেলার মোট আয়তন কত? 

উওর: ২,৮১০.২৮ বর্গ কিলোমিটার হলো নেএকোণা জেলার মোট আয়তন। 

প্রশ্ন: নেএকোণা জেলা থেকে ঢাকা বিভাগের দূরত্ব কত কিলোমিটার? 

উওর: নেএকোণা জেলা থেকে ঢাকা বিভাগের দূরত্ব হলো ১৬২ কিলোমিটার। 

প্রশ্ন: নেএকোণা জেলা কোন বিভাগের অন্তর্গত? 

উওর: ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা হচ্ছে নেএকোণা জেলা। 

প্রশ্ন: ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর থেকে নেএকোণা জেলার দ্রুরুত্ব কত? 

উত্তর: ৬০ কিলোমিটার। 

প্রশ্ন: পূর্বে নেএকোণা জেলার নাম কি ছিল? 

উওর: কালিগঞ্জ। 

প্রশ্ন: নেএকোণা জেলাতে কয়টি গ্রাম রয়েছে? 

উওর: ২,২৯৯ টি গ্রাম রয়েছে নেএকোণা জেলাতে। 

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধে নেএকোণা কত নম্বর সেক্টরে ছিল?

উওর: সেক্টর নং ১১

প্রশ্ন: নেএকোণা জেলার ওয়েবসাইট ঠিকানা লিংক?

উওর: https://www.netrokona.gov.bd/

শেষ কথা

আশা করি আমরা আপনাকে, নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত ও দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এসকল ধরনের লেখা পেতে সর্বদা আমাদের সাথে থাকুন। নেএকোণা জেলা ও নেত্রকোণা কিসের জন্য বিখ্যাত সম্পর্কে আপনি যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আরো  পড়তে পারেন: 

(প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের গুগল নিউজ ফেসবুক পেজ এ অনুসরণ করুন)

Related Articles

Back to top button