সিলেটের দর্শনীয় স্থান
সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে হতে পারে এই পোস্ট আপনার জন্য। সিলেটের দর্শনীয় স্থান রয়েছে অনেক এবং আপনি কোন মৌসুমে সিলেটের দর্শনীয় স্থান কোথায় ভ্রমণ করলে ভালো হবে এ সম্পর্কেও আপনাকে আমরূ জানাবো। তাহলে বন্ধুরা এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে তো পড়তেই হয় আপানাকে। আসুন জেনেনি সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে…
সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ
আমরা প্রথমে সিলেটের দর্শনীয় স্থানসমূহের নাম সংক্ষেপে উপস্থাপন করব এবং পরে এটি ধারাবাহিকভাবে আমরা সুস্পষ্ট ভাবে বিস্তারিত জানাবো এই পোস্টটিতে। সিলেটের দর্শনীয় স্থানসমূহের নাম হল:
- জাফলং
- সিলেটের দর্শনীয় স্থান মাধবকুন্ড
- এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড
- পানথুমাই
- জাকারিয়া সিটি
- ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা
- বিছনাকান্দি
- লাক্কাতুরা চা বাগান
- রাতারগুল
- মালনি ছড়া চা বাগান
- ভোলাগঞ্জ
- লালাখাল
- হাকালুকি হাওর
এবার আসুন আমরা জেনেনি সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত।
জাফলং
সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিশেষ পর্যটন কেন্দ্রটি। এই সিলেটের সিলেটের দর্শনীয় স্থান জাফলং প্রকৃতির কন্য হিসেবেও পরিচিত। জাফলংকে প্রাকৃতিক বৈচিত্রের এক অপরুপ লীলাভূমি বলা হলে চলে। খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে মূলত জাফলং অবস্থিত। ছোট বড় পাহাড়ের ও ঝরণা এ স্থানকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। জাফলং এ পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ যেন জাফলং এর সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করেছে। পাহাড় থেকে বহমান জলপ্রপাত আরো যেন মন মুগ্ধকর। আপনি যদি জাফলং এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে আপানকে বর্ষাকালে এই স্থানটিতে ভ্রমণ করতে হবে। কারন বর্ষাকালে জাফলং এর পরিবেশের লাবণ্য আরো ফুটে ওঠে। এক কথায় জাফলং ঘুরতে যাওয়া সেটা একটি ভ্রমণ হতে পারে।
সিলেটের দর্শনীয় স্থান মাধবকুন্ড
যদি সিলেটের আরেকটি দর্শনীয় স্থানের নাম বলা হয় তাহলে আমাদের সকলের নামটি এটি হলো মাধবকুণ্ড। মাধবকুণ্ডকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বা সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত বলা হয়। তবে মাধবকুণ্ডের পাশে আরেকটি জলপ্রপাত দেখা যায় এটির নাম পরীকুণ্ড জলপ্রপাত। তবে এই জলপ্রপাতটি কেবল বর্ষাকালে উপভোগ করা যায়।মাধবকুণ্ডে রয়েছে কিছু পাহাড়। এসকল পাহাড় কঠিন পাথরে গঠিত। তবে এই মাধবকুণ্ড তীর্থ স্থান হিসেবেও বেশ পরিচিত। উদ্ভিদ ও পাখির কলরবে আপনি এক কথায় মুগ্ধ হবেন এখানে এসে।
এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড
সিলেটে ১৩ একর ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত পার্কটি হলো এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড। এই বিনোদন পার্কে ২৫টি রাইড স্থাপণ করা হয়েছে। এ সকল রাইডের মাধ্যমে বিমান বন্দর এলাকা ও চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আপনি যদি কখনো সিলেটে আসেন তাহলে এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড এ আসতে পারেন।
পানথুমাই
প্রথমে বলে রাখি পাংথুমাই ভ্রমনের উপযুক্ত সময় হলো এপ্রিল মাস থেকে মধ্য অক্টোবর মাস পর্যন্ত। পানথুমাই এ আপনি ‘বড়হিল’ ঝর্ণা দেখতে পাবেন। পর্যটকেরা এই ঝর্ণা দেখার জন্য বেশি এ স্থানে ভ্রমণ করে থাকে। সিলেট জিরো পয়েন্ট থেকে পানথুমাই এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
জাকারিয়া সিটি
জাকারিয়া সিটি প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের এক অপূর্ব লীলাভূমি পাহাড়-টিলার নৈসর্গিক সৌর্ন্দযকে অটুট রেখে গড়ে তোলা হয়। এই ১৭ একর পাহাড়ী জমিতে গড়ে উঠেছে রিসোর্ট। এক কথায় অসাধারণ একটি রিসোর্ট এই জাকারিয়া সিটি।
ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা
ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা দেখার জন্য অনেক পর্যটক এখানে আসেন। ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানাকে দেশের সর্ববৃহৎ ও প্রথম সার কারখানা হিসেবে অবহিত করা হয়।
বিছনাকান্দি
জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বিছানাকান্দি ভ্রমণের একটি অপরূপ জায়গা। জাফলং এর মতো পাথর কোয়ারী ও পাহাড় ঝরনা আপনি এই স্থানে দেখতে পাবেন। এই স্থানটি জুন থেকে সেপ্টেম্বর তথা বর্ষার সময়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরে ওঠে।
লাক্কাতুরা চা বাগান
লাক্কাতুরা চা বাগান উচ্চমানের চা উৎপাদনের জন্য বেশ পরিচিত। এই চা বাগান দেখার জন্য দেশী বিদেশি অনেক পর্যটক লাক্কাতুরা চা বাগান দেখতে আসেন ।
রাতারগুল
রাতারগুল একটি জলাবন যা বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্বীকৃত জলাবন,তবে উল্লেখ্য যে পৃথিবীতে ২২টি মিঠাপানির মতো জলাবন রয়েছে। রাতারগুল এর বিস্তৃত এলাকা জুড়ে রয়েছে জলাভূমি, বন, এবং হ্রদ। রাতারগুল বনের গাছ-গাছালির বেশিরভাগ অংশই বছরে ৪ মাস থেকে ৭ মাস থাকে পানির নিচে। এই রাতারগুল জলাবনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ। এই বনে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, যেমন বনজৈব যা হলো: কর্দম, হিজল, জারুল, বকুল, কেওড়া, ঝাউ, এবং লতাপাতা। রাতারগুল জলাবনে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী, যেমন হরিণ, বন্য শুকর, বানর, কচ্ছপ, সাপ, এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। রাতারগুল জলাবন পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য ও পর্যটন কেন্দ্র । রাতারগুল ভ্রমণের জন্য সেরা সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এই সময় বনের বেশিরভাগ অংশে পানি থাকে না এবং গাছপালা সবুজ থাকে। তবে কেউ যদি পানিতে ভরা এই রাতারগুল অঞ্চলের ভ্রমণের মজা নিতে চান তাহলে এ স্থানে যেতে পারেন।
মালনি ছড়া চা বাগান
যদি উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগানের কথা বলা হয় তাহলে মালনি ছড়া চা বাগানের কথা সবার আগে আসবে। মালনি ছড়া চা বাগান সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি চা বাগান। প্রতি বছর এস্থানে অসংখ্য পর্যটক এই প্রাচীন চা বাগান দেখার জন্য এসে থাকেন।
ভোলাগঞ্জ
দেশের সর্ববৃহত্তম পাথর কোয়ারির এলাকা বলা হয়ে থাকে ভোলাগঞ্জকে।
লালাখাল
ভারতে অবস্থিত চেরাপুঞ্জির নিচে দিয়েই বললেই লালাখালের অবস্থান বলা যায়। আপনি জানেন কি লালাখালের পানির রং সম্পর্কে লালা খালের পানির রং নীল। আপনি কি জানেন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় সিলেটের এই লালাখালে। আর লক্ষ লক্ষ পর্যটক লালাখালে আসেন তাদের ভ্রমণকে আর আনন্দপূর্ন করতে।
শেষ কথা
সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আশা করি আমরা আপনাকে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। আপনার যদি সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি কমেন্ট করে জানান আমরা আপনার প্রশ্নের উওর দ্রুত দিবো।
আরো পড়তে পারেন:
(প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের গুগল নিউজ ও ফেসবুক পেজ এ অনুসরণ করুন)